সিডনি নিউজ ডেক্সঃ- আসছে দিন খুবই ভয়ংকর। দেশটির ৭০ শতাংশের বেশি ভূগর্ভস্থ এলাকা শুকিয়ে গেছে। খুব শিগগিরই পানির জন্য গোটা দেশে হাহাকার শুরু হয়ে যাবে।
তীব্র পানি সংকটে শরণার্থী হবে কোটি কোটি ভারতীয় নাগরিক। ম্যাগসেসে পুরস্কারজয়ী পরিবেশবিদ রাজেন্দ্র সিং সম্প্রতি এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।যত দ্রুত সম্ভব পানি নিয়ে সচেতন হওয়া জরুরি বলে জানিয়েছেন ‘ভারতের ওয়ারটারম্যান’খ্যাত এ পরিবেশবিদ। রাজেন্দ্র বলেন, ইতিমধ্যেই মধ্য এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলো ইউরোপ থেকে পানি নিয়ে আসতে শুরু করেছে। এসব অঞ্চলের মানুষেরা ইতিমধ্যে ‘পানি শরণার্থী’তে পরিণত হয়েছেন। ভারতেও একই পরিস্থিতি তৈরি হতে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন রাজেন্দ্র। খবর পিটিআইয়ের।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার ইন্সটিটিউট (এসআইডব্লিউআই) আয়োজিত বিশ্ব পানি সপ্তাহ সম্প্রতি শেষ হয়েছে। সেখানে রাজেন্দ্র বলেন, ভারতে ‘পানি শরণার্থী’ ইতিমধ্যে গ্রাম থেকে শহরে পাড়ি জমানো শুরু হয়েছে।
পুরো দেশে পানির সংকট আরও তীব্র হলে অন্য দেশে পাড়ি জমাতে বাধ্য হবেন কোটি কোটি নাগরিক। চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ওয়াটার রিসোর্স ইন্সটিটিউট (ডব্লিউআরআই) প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়, ‘আগামী দিনগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের খারাপ প্রভাবের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ভারত।
দেশটির একটি বড় অংশই গরিব এবং জলবায়ু সংবেদনশীল খাতগুলোর ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল। আর এ কারণেই ভারত জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের মুখোমুখি হবে।’
পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করায় ২০০১ সালে ম্যাগসেসে পুরস্কার পান রাজেন্দ্র। তিনি জানিয়েছেন, ভারতের প্রায় ৭২ শতাংশ এলাকায় ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমে গেছে।
এ বছর ১৭টি রাজ্যের ৩৬৫টি জেলায় খরা হয়েছে। মাত্র ১৯০টি জেলায় বন্যা হয়েছে এবারের বর্ষায়। ২০১৫ সালে স্টকহোম ওয়াটার পুরস্কারপ্রাপ্ত রাজেন্দ্র বলেন, পানি সংকট মোকাবেলায় সরকার ও জনগণকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
নীতি আয়োগের রিপোর্ট বলছে, ২০২০ সালের মধ্যে দেশের ২১টি শহরে জলস্তর একেবারে নিচে নেমে যাবে। এর মানে প্রায় জলশূন্য অবস্থায় পৌঁছে যাবে এ শহরগুলো।
ভারতের গৃহস্থালির ৭৫ শতাংশ এবং কৃষি খাতের সেচের জন্য ৮০ শতাংশ ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীল। দ্রুত জলসংরক্ষণে কোনো উদ্যোগ না নিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের ৬০ শতাংশ বাসিন্দা চরম পানি সংকটে পড়বে।
পরিবেশকর্মী যে ভুল কথা বলেননি, সেটা এবারের বর্ষায় খুব ভালো করেই টের পেয়েছে ভারত। দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ ও চেন্নাইয়ের মতো এলাকা পানির জন্য হাহাকার করেছে।হাজার হাজার টাকা দিয়েও পানি পাননি বাসিন্দারা। ট্রেনে তেলের ট্যাঙ্কের মতো ট্যাঙ্কে করে পানি নিয়ে যাওয়া হয়েছে রাজ্যে। পানি সংকট পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তিনি একটি পৃথক মন্ত্রণালয় খুলেছেন। পানি সংরক্ষণের জন্য কারও কোনো পরামর্শ থাকলে তাকে জানাতে বলেছেন। এ নিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলারও বার্তা দিয়েছেন মোদি।
সূত্রঃ যুগান্তর, আর এম
Leave a Reply