News Headline :
বোরহানউদ্দিনে গৃহ প্রদান উদ্বোধন উপলক্ষ্যে ইউএনও”র সংবাদ সম্মেলন বোরহানউদ্দিনে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত রাজশাহীর পুঠিয়ার বানেশ্বর হাটে কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হলেও  উন্নয়ননের রেশ নেই  বোরহানউদ্দিনে রাতে ককটেল বিস্ফোরণ “এলাকায় আতঙ্ক আওয়ামী লীগ দেশ ছেড়ে পালায় না: বিএনপি নেতারাই পালিয়ে যায়।রাজশাহীর জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বোরহানউদ্দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক চেয়ারম্যানকে পিটিয়ে জখম। বোরহানউদ্দিনে অবৈধ ট্রাক্টর কেড়ে নিলো আরমানের জীবন বোরহানউদ্দিনে জেলেদের মাঝে সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ বোরহানউদ্দিনে জমি দখল করতে সরকারি বরাদ্ধে নির্মিত বাজার ও মসজিদের টয়লেট ভেঙ্গে নিচ্ছে সাংবাদিকের কলমই পারে অপরাধীকে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে… প্রেসক্লাব সভাপতি অনু
রাতেই কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য

রাতেই কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য

রাতেই কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য

আব্দুর রহিম হাওলাদার(রাজু) ভেতরে ঢুকলেই বিস্মিত হতে হয়। বিশাল হলঘরটি রংবেরঙের ছবি দিয়ে সাজানো। তার মধ্যে জুয়া খেলার আধুনিক সরঞ্জাম। কোনোটার নাম স্লট মেশিন, কোনোটা রুলেট বোর্ড, কোনোটা ডার্ক বোর্ড। মুখ ঢেকে নিজেকে আড়াল করার জন্য আছে মুখোশ, সিসার সরঞ্জামও আছে। এ দৃশ্য ভিক্টোরিয়া ক্লাব ক্যাসিনোর। প্রায় একই ধরনের দৃশ্য মোহামেডান, আরামবাগ ও দিলকুশা ক্লাবেও।

যুবলীগ নেতাদের এসব ক্যাসিনোতে প্রতি রাতে কোটি কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য চলত। পুলিশি পাহারায় চলা ক্যাসিনোগুলো গতকাল পুলিশই ভেঙে দিয়েছে। চারটি ক্যাসিনো থেকে জব্দ করা হয়েছে জুয়া খেলার নানা সরঞ্জাম।

এই তল্লাশির সময় পুলিশকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনারের কাছে সাংবাদিকেরা জানতে চান, থানার নাকের ডগায় এত দিন ধরে কী করে এই ক্যাসিনো চলল? উপকমিশনারের জবাব, ‘আমরা যখনই অভিযোগ পেয়েছি, অভিযান চালিয়েছি। তদন্ত হচ্ছে, এখন ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হয় গত বুধবার। সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে ওই দিন মতিঝিলের ইয়ংমেনস, ওয়ান্ডারার্স, মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্র ও বনানীর গোল্ডেন ঢাকা ক্লাবে অভিযান চালানো হয়। ওই দিন এসব ক্লাব সিলগালা করে দেওয়া হয়। মতিঝিলে অভিযানের সময় ইয়ংমেনস ক্লাবের সভাপতি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গুলশানের বাসা থেকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার রাতে কলাবাগান ক্রীড়া চক্র ও ধানমন্ডি ক্লাবে অভিযান চালানো হয়। কলাবাগানে অভিযানের আগে ক্লাবের সভাপতি শফিকুল আলমকে (ফিরোজ) অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়। ধানমন্ডি ক্লাবের বার শুক্রবার সিলগালা করে দেয় র‍্যাব।

গতকাল সিলগালা করে দেওয়া চারটি ক্লাবে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তল্লাশির সময় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব, আরামবাগ ও দিলকুশা ক্লাব থেকে ক্যাসিনো বোর্ডসহ বিপুল পরিমাণ জুয়া খেলার সামগ্রী উদ্ধার করে পুলিশ। এসব সামগ্রীর সঙ্গে টাকা, মদ, বিয়ারও পাওয়া যায়। অভিযান চালানো এই ক্লাবগুলোয় যে জুয়া খেলা হয়, সে ব্যাপারে আগে থেকে কোনো তথ্য পুলিশের কাছে ছিল না বলে দাবি করেছেন অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) শিবলী নোমান। তিনি বলেন, এই ক্লাবগুলোর ভেতরে যে ক্যাসিনো বোর্ড আছে বা এখানে যে জুয়া খেলা হতো, এ বিষয়ে পুলিশের কোনো ধারণা ছিল না। চারটি ক্লাবে তল্লাশির সময় কাউকে আটক করা হয়নি।

অভিযানে থাকা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিঝিল বিভাগের সহকারী কমিশনার মিশু বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবে ৯টি ক্যাসিনো বোর্ড পাওয়া গেছে। ক্লাবটির শীতাতপনিয়ন্ত্রিত হলরুমে ঢুকে দেখা গেছে, সুসজ্জিত ও অত্যাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন হলরুমে জুয়া খেলার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অভিযানে ৯টি ক্যাসিনো বোর্ডের পাশাপাশি অসংখ্য জুয়া খেলার বোর্ডও পাওয়া গেছে। ক্লাবটি থেকে ১ লাখ টাকাও জব্দ করা হয়। জুয়া খেলতে আসা ব্যক্তিদের জন্য ক্লাবের ভেতরে আছে আলাদা রান্নাঘর। সেখানে চায়নিজসহ সব ধরনের খাবার তৈরির ব্যবস্থা আছে। প্রতিটি ক্লাবের পেছনের দিকে আছে পালানোর জন্য বিশেষ পথ। ভিক্টোরিয়া ক্লাবে শেখ সেলিমের একটি বইয়ের অনেক কপি দেখা গেল। এগুলো জুয়াড়িদের মধ্যে বিক্রি হতো। নেপালিদের প্রার্থনার জন্য বিশেষ কক্ষও সেখানে রয়েছে। অভিযানের সময় অনেকে বলেছেন, একটি ক্যাসিনোতে প্রতি রাতে এক থেকে দেড় কোটি টাকার লেনদেন হতো।

ভিক্টোরিয়ার পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবেও অভিযান চালানো হয়। সেখানে ভিআইপিদের জন্য আছে আলাদা ছোট ছোট কক্ষ। ক্লাবের ভেতর থেকে ১২টি ওয়াকিটকিও উদ্ধার করে পুলিশ। আরামবাগে ক্যাসিনোটি এত বড় নয়। তারপরও সবই ছিল সেখানে।

ভুল ধারায় মামলা
বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে করা মামলাটি ভুল ধারায় করার অভিযোগ উঠেছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন র‍্যাব কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, অস্ত্র আইনে করা মামলাটি তাঁরা ১৮৭৮ সালের ১৯ক ধারায় করার আবেদন করেন। কিন্তু পরে দেখা যায়, মামলাটি ১৯৭৮ সালের ১৯ক ধারায় করা হয়েছে। অথচ ১৯৭৮ সালের অস্ত্র আইন বলে কিছু নেই। র‍্যাব এ নিয়ে আপত্তি জানানোর পর বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে আসে। এরপর ধারাটি সংশোধন করা হয়।

জানতে চাইলে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, এখন আর কোনো ভুল নেই। সব ঠিক আছে।

র‍্যাব কর্মকর্তারা জানান, ক্যাসিনোর মামলা র‍্যাব তদন্ত করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তদন্ত পায়নি। পুলিশের অনেক কর্মকর্তা ক্যাসিনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

ক্যাসিনোর সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে। তদন্তে সবকিছুই বেরিয়ে আসবে।

সূত্রঃ প্রথম আলো

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 NewsTheme
Desing & Developed BY ServerNeed.com