News Headline :
বোরহানউদ্দিনে গৃহ প্রদান উদ্বোধন উপলক্ষ্যে ইউএনও”র সংবাদ সম্মেলন বোরহানউদ্দিনে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত রাজশাহীর পুঠিয়ার বানেশ্বর হাটে কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হলেও  উন্নয়ননের রেশ নেই  বোরহানউদ্দিনে রাতে ককটেল বিস্ফোরণ “এলাকায় আতঙ্ক আওয়ামী লীগ দেশ ছেড়ে পালায় না: বিএনপি নেতারাই পালিয়ে যায়।রাজশাহীর জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বোরহানউদ্দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক চেয়ারম্যানকে পিটিয়ে জখম। বোরহানউদ্দিনে অবৈধ ট্রাক্টর কেড়ে নিলো আরমানের জীবন বোরহানউদ্দিনে জেলেদের মাঝে সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ বোরহানউদ্দিনে জমি দখল করতে সরকারি বরাদ্ধে নির্মিত বাজার ও মসজিদের টয়লেট ভেঙ্গে নিচ্ছে সাংবাদিকের কলমই পারে অপরাধীকে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে… প্রেসক্লাব সভাপতি অনু
“আশ্চর্য রুমাল”( পর্ব -২)/ সিডনিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম

“আশ্চর্য রুমাল”( পর্ব -২)/ সিডনিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম

“আশ্চর্য রুমাল” (২য় পর্ব)

মুনিরা আক্তার

নভেম্বর এর শেষের দিকে।বড়দিনের আর বেশি দেরি নেই। গতকয়মাসে হাড় ভাঙা পরিশ্রম করেছে জোসেফ।দিনে মাত্র একবেলা খেয়ে অনেক কষ্ট করে জেনির মনের মত উপহার দেয়ার জন্য টাকা জমিয়েছে।আর মাত্র একশ ডলার। ব্যাস! তাহলেই শান্তি।এবারের বড়দিনটা অনেক সুন্দর করে উৎযাপন করবে।ক্রিসমাস ট্রি,রং বেরঙের লাইট দিয়ে ঘর সাজাবে, ওহ্ হ্যাঁ! একটা বড় কেক আনতে হবে তাতে Merry Christmas তো লেখা থাকবেই,তার সাথে লেখা থাকবে, “The second birthday of my princess in this year” এসব কথা ভাবতে ভাবতে জোসেফ অফিস থেকে বাড়ি ফিরছিল।তার পায়ের তালের সাথে ভাবনারাও কেমন তাল মেলাচ্ছে।জোসেফ যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে তার জেনি সেই মারমেইড স্কার্ট পড়েছে, তাকে পুরো জলপরী লাগছে, আর জোসেফ তার সাথে বল ডান্স করছে।কি অদ্ভুত! এ যেন এক চেতনে সপ্ন, জোসেফের চোখ দুটো স্থির, শুধু পথ চলছে।হটাৎ একটা গাড়ির শব্দে তার ঘোর কেটে গেল।সে নিজেকে আবিষ্কার করলো রাস্তার মাঝখানে।জোসেফ কিছু বুঝে ওঠার আগেই একটা বড় গাড়ি তাকে ধাক্কা দিয়ে দিল।অবশ্য ড্রাইভার ব্রেক ঠুকেছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।তবে শেষ রক্ষা হলো না।জোসেফের অচেতন দেহ রাস্তার পাশে পড়ে রইলো।রাস্তা দিয়ে তার অফিসের কয়েকজন কলিগ যাচ্ছিলো।জোসেফকে ঐ অবস্থায় দেখে তারা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।তাদের মধ্যে একজন জোসেফের বাড়িতে গিয়ে তার মেয়েকে খবরটা দেয়।জেনি ছুটে হাসপাতালে যায়।বাবাকে ঐ অবস্থায় দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে জেনি।ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করে উনি কবে সুস্থ হবেন? ডাক্তার বলেন সুস্থ হতে প্রায় ৩ মাস লাগবে।আর জোসেফের পায়ের কয়েক টা হাড় ভেঙে গেছে তাই হয়তো আর কোনদিন হাঁটতে পারবেনা।যদি রেগুলার ট্রিটমেন্টে রাখা হয় তাহলে হয়তো ভালো হলেও হতে পারে।তবে তা অনিশ্চিত। ডাক্তারের কথা শুনে জেনি একদম ভেঙে পড়ল।কি করবে, কোথা থেকে চিকিৎসার টাকা জোগাড় করবে।অ্যাক্সিডেন্টের পর হাসপাতালে ভর্তি করা আর সাময়িক কিছু খরচ বহন করেছিল জোসেফের অফিসের কলিগরা।কিন্তু এখানেই তো শেষ নয় ডাক্তার যা বললেন তাতে আরো অনেক খরচের ব্যাপার।এত টাকা কোথায় পাবে জেনি? এসব ভাবতে ভাবতেই যখন দুনিয়া প্রায় অন্ধকার হয়ে এলো তখন একমুঠো আশার আলো হয়ে এলো জেনির একমাত্র মামা।ইহজগতে আত্মীয় বলতে যদি কেউ থেকে থাকে তাহলে সেটা জেনির মামাই ছিল।মামা সবকিছু শুনে জেনির মাথায় হাত রেখে বললো, “এত ভাবছিস কেনো? আমি কি মরে গেছি নাকি? দেখিস সব ঠিক হয়ে যাবে।”মামার কথায় জেনি একটু ভরসা পেল।এরপর বেশ কিছুদিন কেটে গেল। জোসেফের চিকিৎসার খরচ আর সংসার চালাতে মামার আর্থিক সাহায্য অপর্যাপ্ত ছিল।তাই বাধ্য হয়ে জোসেফের জমানো টাকাও খরচ করতে হলো। ধীরে ধীরে জোসেফ সুস্থ হয়ে উঠতে লাগলো।গভীর রাত জোসেফ জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে।বাইরে নিঃশব্দে তুষার পাত হচ্ছে। আশে পাশের বাড়িঘরে লাল নিল আলো জ্বলছে।বাতাসের সাথে একটা চেনা গান ভেসে আসছে। Jingle bells, jingle bells, jungle on the way. হ্যাঁ! আজকেই সেই রাত যার জন্য কতই না কষ্ট করতে হয়েছিল।বড়দিন হলেও তার বিন্দুমাত্র আমেজ ছিলনা জোসেফের ঘরে।জেনি গোমড়া মুখ করে বসে আছে। জোসেফের অ্যাক্সিডেন্টের পর থেকে তাকে আর হাসতে দেখা যায়নি।হয়তো তার পছন্দের জিনিস এনে দিতে পারিনি বলে? জোসেফ কিছুক্ষণ তাকে দেখছিল।তারপর, নিজের রুমে গেল। ফিরে এলো ছোট একটা বাক্স নিয়ে। জেনির দিকে বাক্সটা এগিয়ে দিতেই, জেনি কিছুটা কৌতুহলী হয়ে বাবার দিকে তাকালো। এবার জোসেফ বলতে শুরু করল:
— জেনি আজ বড়দিন।এই দিনে তোমাকে তোমার কাঙ্ক্ষিত উপহারটি দেওয়ার কথা ছিল। যদিও তোমাকে কথা দেয়া শর্তেও আমি তা দিতে ব্যর্থ হয়েছি। তবুও এই শুভদিনে তোমাকে কিছু দিতে না পারলে আমি শান্তি পাবো না।তাই এটা তোমার জন্য এনেছি। আমার বিশ্বাস তোমার এটা ভালো লাগবে।
–শোনো বাবা।আমি কিছু চেয়েছিলাম তোমার কাছে তুমি সেটা দিতে পারোনি।তাই এসব সান্ত্বনা আমার চাইনা।
— আমি সবটা বুঝতে পারছি মা। কিন্তু এখন তো সত্যিই আমার পক্ষে তোমার ইচ্ছে পূরণ সম্ভব না।তবে তোমাকে এখন যা দিচ্ছি সেটাকে মূল্যহীন ভাবলে অনেক বড় ভুল করবে।বাক্সটা একবার খুলে দেখ।
জেনি বাক্সটা নিল এবং খুলে দেখলো। ভেতরের জিনিসটা তার জমানো হতাশাকে যেন দ্বিগুন করে দিল।
–একি! এটা তো একটা রুমাল আমি এটা দিয়ে কি করবো?
রাগে জেনি রুমালটা ফেলে দিতে গেলে। জোসেফ তার হাত ধরে ফেলল।
–এই বোকামি করো না।এটা কোন সাধারণ রুমাল না।আর না তো আমি তোমার সাথে মজা করছি।জেনি, আমি তোমাকে এখন যা বলবো তা মন দিয়ে শোনো।
জেনি চোখ বড় বড় করে বাবার দিকে তাকিয়ে আছে।
(চলবে)

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 NewsTheme
Desing & Developed BY ServerNeed.com