জে– কেমন আছো?
রি- এইতো যেমন দেখছো? তোমার কি অবস্থা?
জে- ভালো আছি হয়তো।
রি-হয়তো কেন?
জে-(মুচকি হেসে) এমনি।
তারপর কিছুক্ষণ দুজনেই চুপ। হটাৎ দুজনে একসাথে বলে উঠলো,” আমার তোমাকে কিছু বলার আছে”।নিজেদের এমন কাকতালীয় ব্যাপার দেখে দুজনেই হাসলো কিছুক্ষণ।রিক বললো, ঠিক আছে তুমি আগে বলো।জেনি বললো ,না তুমি বলো।জোরাজুরির একপর্যায়ে জেনিই রাজি হলো বলতে।
“আসলে কথাটা কিভাবে বলবো জানিনা।তোমার প্রতি সম্প্রতি আমার কিছু আবেগ কাজ করতে শুরু করেছে, দুর্বলতাও বলতে পারো।জানিনা কেন? আমার দৈনন্দিন জীবনের কোনোকিছুই আগের মত নেই।তোমার কাছে যতক্ষণ থাকি আমার মনে হয় আমি যেন স্বর্গে রয়েছি।কিন্তু তোমার বিচ্ছেদ আমাকে নরক অপেক্ষা বেশি যন্ত্রণা দেয়। নিজের অজান্তেই কখন যে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি বুঝতে পারিনি।আমি আজীবন তোমার সাথেই থাকতে চাই। তুমি কি তোমার মনে একটু জায়গা দেবে আমাকে? ফিরিয়ে দেবে না তো?
জেনির রিকের হাত দুটো শক্ত করে ধরে রিকের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।রিক একদম নিস্তব্দ।মনে মনে ভাবছে, যে ভয়টা পাচ্ছিলাম সেটাই হলো।
কিছুক্ষন পর রিক বলতে শুরু করল:
“দেখ জেনি! আমি তোমার অনুভুতি বুঝতে পারছি এবং তাকে শ্রদ্ধাভরে দেখছি।কিন্তু আমার পক্ষে তোমার প্রস্তাব গ্রহণ করা সম্ভব না।
জে- কিন্তু কেন? তুমি কি আমাকে ভালোবাসো না?
রি- না। আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি।আর আমি তো তোমাকে কখনও বলিনি আমি তোমাকে ভালোবাসি?
জে- কাকে ভালোবাসো তুমি?
রি- তোমার বান্ধবী মারিয়া কে।মারিয়াও আমাকে ভালোবাসে।
জেনির চোখ থেকে অশ্রু ঝরছে।রাগ আর কষ্ট মিলে
এ যেন অন্যরকম অনুভূতি।জেনির শরীর কাপছে।
” তাহলে মারিয়া আমাকে জানালো না কেন?”রিকের দিকে না তাকিয়েই প্রশ্ন করল জেনি।
“আমি ওকে বারন করেছিলাম কাউকে জানাতে, তাই হয়তো।”
হটাৎ জেনি রিককে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো।প্লিজ এমন করো না।আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারবোনা।
জেনির থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে রিক বললো।আমি অপারগ,আমার সত্যিই কিছু করার নেই।আমাকে ক্ষমা করো।
রিক চলে গেল।জেনি দাড়িয়ে ভাবতে লাগলো কি হলো এটা? সে কি করবে এখন?মারিয়াকে দেখতে পেয়ে ছুটে গেল তার দিকে।মারিয়ার গালে সজোরে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল।তারপর তাকে বললো,তুই সবকিছু কেন আমার কাছ থেকে গোপন রেখেছিস? রিক আর তোর ব্যাপারটা কেন বলিসনি? আজকে তোর জন্য আমার জীবন শেষ হওয়ার পথে।
মারিয়া অনুনয় বিনয় করে বলতে লাগল,”আমি তোকে বলতাম রিক বারন করায় বলিনি।তুই আমাকে ক্ষমা…..
থাক!(মারিয়াকে থামিয়ে দিয়ে জেনি বললো)
আমাকে দয়া দেখাতে আসবি না।আমি জানি রিক আমাকেই ভালোবাসে।কোনো একটা কারণে হয়তো বলতে পারছেনা। আমি কারণটা বের করেই ছাড়বো।
জেনি আর কিছু বললো না।দৌড়ে বেরিয়ে এলো ডান্স স্কুল থেকে।
মারিয়া খুব চিন্তিত হয়ে পড়ল।রিক মারিয়াকে অভয় দিল জেনি কিছুই করতে পারবেনা।রিকের কথায় মারিয়া কিছুটা স্বস্তি পেল।বেশ কিছুদিন সব ঠিকঠাকই চলছিল। মারিয়া রিক নিয়মিত ডান্স স্কুলে যেত কিন্তু জেনিকে ঐ ঘটনার পর থেকে তারা আর আসতে দেখেনি।
এদিকে জেনির জীবন চলছিল ছন্দহীন ভাবে। প্রথম প্রথম কয়েকদিন রিককে বোঝানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়নি। অপরদিকে, জেনির বাবার শরীর দিন দিন খারাপ হতে লাগলো। জেনির সেদিকে নজর ছিল না বললেই চলে। উল্টো জোসেফ তার উদাসীনতা দেখে কিছু জানতে চাইলেই জেনি তার সাথে খুব খারাপ ব্যাবহার করতো।সময়ের সাথে সাথে মানুষ নিজেকে খানিকটা পরিবর্তন করতে চাইলেও অনেক ক্ষেত্রে তা হয়তো হয়ে ওঠেনা সমাজের কারনে। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হলো না।
(চলবে)
Leave a Reply