ও মালতি কাঁদছিস কেন!
কি হয়েছে! রাঙা দা ঠোঁট ছুঁয়েছে?
ওমা,ওমা কি বোকা মেয়ে; এতো আনন্দের কথা
মালতি, তোর মতো যদি আমার কপাল হতো!
শেষ কবে শুনেছিলাম পাখি ডাকছে
‘বউ কথা কও’ তারপর আর আর ডাকেনি,
ডাকলেই বা কি আমি কি কারো বউ?
কবে বেনুদা বলেছিলো,
‘অপেক্ষায় থাকিস আমি আসবোরে রাণু’।
অপেক্ষায় থাকলাম……
দিনকাল মাস পেরিয়ে বছর ঘুরে বছর আাসে-
সাদা চুলে কালো রঙ মেখে, পথ চেয়ে থাকি বসে
জানিস মালতি, বেণুদা আর আাসেনি।
যুদ্ধের ডামাডোল থেমে গেলো,
কপালে তিলক কেটে বলে দিলো-
আমি নাকি ‘বারাঙ্গনা’। তুই ই বল মালতী!
যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায় আমার কি রক্ত ঝরেনি!
বুকের ভেতর ক্ষত তৈরি হয়নি!
সে কথা কেন আসেনি ইতিহাসের পাতায়!
দু’চোখে কি অশ্রু ঝরেনি
কেন লেখা হয়নি নামটি বীরাঙ্গনার খাতায়!
জানিস মালতি,
‘শরীরের ক্ষত মলমে শুকায়;
অন্তরের ক্ষত অন্তরে মিলায়’।
আমার ক্ষত শুকিয়ে যাওয়া নদীর মতন
ঢেউ নেই; বহমান রেখা কেবল দৃশ্যমান।
মালতী বলি তোকে,
লাল সবুজের পতাকার তলে দাঁড়িয়ে-
নারীদের কাঁদতে নেই; চোখে জল আনতে নেই
তুই ও কাঁদিস না
জানিস না মালতী! নারীর জাীবনে একটাই গতি
পরের ঘরে আলো জ্বালাতে হতে হয় মোমবাতি।
শোন মালতী,
তোর রাঙাদা এলে বলিস-
লাল টুকটুকে শাড়ি এনে রাখতে,
পারলে এক শিশি আলতা, সাজাবো রাঙা চরণ
আমার তো হলো না।
আমি এখন স্বপ্ন দেখি-
সিঁথির আগুনে জ্বলছে চিতা, পাশে দাঁড়িয়ে বেণুদা।
Leave a Reply