সন্ধ্যা নামতেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বসে মাদকের আসর। নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার সুযোগে ক্যাম্পাসের পিছনের অংশে নিয়মিত মাদকের আসর বসাচ্ছে বহিরাগত মাদকসেবীরা। এতে যেকোনো সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে বলে শঙ্কা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। এমনকি ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকবার।
সরেজমিনে দেখা যায়, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের পিছন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের ডান পাশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান হল পর্যন্ত নেই কোনো সীমানা প্রাচীর। প্রতিষ্ঠার পর খুঁটি ও কাঁটাতারের নামমাত্র প্রাচীর দিলেও নজরদারির অভাবে সেই খুঁটি থাকলেও কাঁটাতার খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এতে অতি সহজেই বহিরাগতরা প্রবেশ করছে ক্যাম্পাসে। এ সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীরা ক্যাম্পাসের পেছনের এ অংশটিকে কেন্দ্র করে তাদের ব্যবসায় পরিচালনা করে এবং মাদকসেবীরাও এখানে নিরাপদে মাদক গ্রহণ করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা কর্মীর অভাবে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না জানিয়ে নিরাপত্তা শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাদেক হোসেন মজুমদার বলেন, ‘আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী না থাকায় আমরা বহিরাগতদের বিষয়ে পুরোপুরি কাজ করতে পারছি না। বর্তমানে আনসার বাহিনীর সদস্য ২৯ জন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ২৩ জন নিরাপত্তাকর্মী দায়িত্ব পালন করে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। আমার দপ্তরে আরও প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন কর্মী দরকার।’
সিসি ক্যামেরার বিষয় নিয়ে আইসিটি সেলের প্রোগ্রামার মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার জন্য রয়েছে মোট ২৩ টি সিসিটিভি ক্যামেরা। এর মধ্যে সচল রয়েছে ১৭টি, বাকিগুলোতে রয়েছে হার্ডওয়্যারগত সমস্যা। এছাড়া আরও ৮ থেকে ১০ টি ক্যামেরা প্রয়োজন রয়েছে। মুক্তমঞ্চ, মসজিদ এবং শহীদ মিনারের মত গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ক্যামেরা স্থাপনের কাজ চলছে।’
তাছাড়া ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার দৃশ্য সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য নেই কোন জনবল। এরমধ্যে সিসি ক্যামেরাগুলো অনেকদিন আগে স্থাপন করায় কারিগরি ত্রুটির কারণে বেশিরভাগ ক্যামেরারই রেকর্ড সংরক্ষিত হয় না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা তেমন একটা ক্যাম্পাস এলাকায় নেই, এই সুযোগে বহিরাগতরা বিশেষ করে মাদকসেবীরা বিশ্ববিদ্যালয়কে মাদক গ্রহণের অভয়ারণ্য বানিয়ে ফেলেছে। ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মাঠ, লালন চত্বরসহ পেছনের অংশে নিয়মিত মাদকের আসর বসলেও কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সীমানা প্রাচীর এবং সিসি ক্যামেরা না থাকার সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীসহ বহিরাগতদের উৎপাত বেড়েছে। অনতিবিলম্বে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ না করলে যেকোনো সময় বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ১২ মার্চ কেন্দ্রীয় মাঠের পাশে নবনির্মিত পরিবহন মাঠে বহিরাগতদের হাতে হয়রানির শিকার হয় শিক্ষার্থীরা। এর আগের বছর ২৩ আগস্ট এক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস অভ্যন্তরেই ছিনতাইয়ের শিকার হয়। এ ঘটনাগুলোতেও প্রশাসনের পক্ষ হতে দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘সীমানা প্রাচীর তৈরি করতে হলে আমাদের আনুমানিক দেড়-দুই কোটি টাকার প্রকল্পের প্রয়োজন। টাকা পেলে পেছনের অংশে একটি নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন করা হবে। আর নিরাপত্তা কর্মীদের বিষয়ে ইউজিসিতে বিভিন্ন পদের জন্য আবেদন করা হয়েছে। ইউজিসি থেকে নিরাপত্তা কর্মীদের পদ দিলেই আমরা নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ দিতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ এবং সিসি ক্যামেরা বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে, দ্রুত সমাধান আসবে।’
সূত্রঃ সময় টিভি।
Do you mind if I quote a couple of your articles as long asI provide credit and sources back to your website?My blog site is in the very same niche as yours and my users would certainly benefit from some of the information you present here.Please let me know if this okay with you. Thanks!