অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য নগরী সিডনিতে একই পরিবারের চার জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে মাহমুদ তিতাসের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। বর্তমানে তিনি ক্যাম্পবেল টাউন হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে আছেন।
গত বছরের মার্চ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া জুড়ে ৩৫ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৯৩২ জনের। এই প্রথমবারের মতো কোনো বাংলাদেশি করোনায় আক্রান্ত হলেন।
মাহমুদ তিতাসের পারিবারিক বন্ধু মেহেদী হাসান কচি জানান, তিতাস আগে থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় করোনার বিষয়ে খুবই সতর্ক ছিলেন। গত ২৯ জুলাই বাসার সামনে ময়লা ফেলতে গেলে পাশের বাসার একজনের সঙ্গে তার দেখা হয়। তার সঙ্গে মাত্র কয়েক মিনিট কথা হয় তিতাসের। ওইদিন রাতেই তিনি করোনার উপসর্গ টের পান। পরদিন তিতাস জানতে পারেন, তার সঙ্গে কথা বলা ওই প্রতিবেশীর করোনা শনাক্ত হয়েছে। মাহমুদ তিতাস হাসপাতালে গিয়ে করোনা টেস্ট করালে তারও রেজাল্ট পজিটিভ আসে। তিনি হাসপাতালে ভর্তি হবার পর তার স্ত্রী এবং দুই ছেলেরও সংক্রমণ ধরা পড়ে। তারাও এখন একই হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
আজ শুক্রবার তিতাস মাহমুদের বাবা করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে মৃত্যুবরণ করেছেন।
মাহমুদ তিতাস ভ্যাকসিন নেওয়ার সুযোগ পাননি। যেদিন তার সংক্রমণ শনাক্ত হয়, এর পরদিন ভ্যাকসিন গ্রহণের বুকিং ছিল। গতকাল সিডনিতে করোনায় যে পাঁচ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে মাত্র একজনের ভ্যাকসিন নেওয়া ছিল। আজ দক্ষিণ-পশ্চিম সিডনির একজন ষাটোর্ধ নারী মারা গেছেন, তিনি ভ্যাকসিন নেওয়া ছিলেন না।
চীফ হেলথ অফিসার কেরি চ্যান্ট বলেছেন, ‘৫০ জন রোগী ইনটেনসিভ কেয়ারে আছেন। তাদের ৪৪ জনই ভ্যাকসিন নেননি। বাকিরা একটি করে ডোজ নিয়েছেন। দেশের প্রত্যেক নাগরিককে ভ্যাকসিন গ্রহণের বিষয়ে সরকার বার বার তাড়া দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন নিশ্চিত করেছেন যে, আগামী সপ্তাহের শুরুতে নিউ সাউথ ওয়েলসে ফাইজার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের অতিরিক্ত ৮০ হাজার ডোজ দেওয়া হবে।’
‘ডোহার্টি ইনস্টিটিউট’ নামের একটি সংগঠন অস্ট্রেলিয়া সরকারের জন্য একটি বৈজ্ঞানিক মডেল তৈরি করেছে।
এই গুরুতর মহামারির সময় সম্ভাব্য মৃত্যু সংখ্যা কেমন হতে পারে, সেটি জানার কঠিন কাজটি তারা করেছে।
তারা বলছে, অস্ট্রেলিয়ার ৫০ ভাগ মানুষকেও যদি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়, তারপরও অন্তত নয় হাজার মানুষের মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকবে।
নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার গ্ল্যাডিস বেরেজিক্লিয়ান আজ বলেছেন, ‘আগামী দিনগুলোতে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের সংখ্যা আরও বাড়বে।’
তিনি দ্রুত ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা যত বেশি লোককে ভ্যাকসিন দেব, ততো তাড়াতাড়ি আমরা আরও স্বাধীনভাবে বাঁচতে সক্ষম হব।’
Leave a Reply