মালিহা মুন্নি – আমতলী, বরগুনাঃ- তালতলী উপজেলার অগ্রণী ব্যাংক শাখা থেকে প্রতারণা করে অন্যের জমি মর্টগেজ দিয়ে ৫ লাখ টাকা সিসি ঋণ গ্রহণ করেছেন রাজ্জাক এন্টারপ্রাইজের মালিক শহীদ তালুকদার। ওই ঋণ পরিশোধ না করায় ঋণের বিপরীতে দেয়া জমি নিলামে উঠেছে। এতে ভিটেমাটি হারাতে বসেছে ১৫ অসহায় পরিবার। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর। দ্রুত প্রতারণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে নিলাম বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
জানা গেছে, তালতলী উপজেলার হেলেঞ্চাবাড়িয়া গ্রামের রাজ্জাক তালুকদাদের ছেলে শহীদ তালুকদার মেসার্স রাজ্জাক এন্টারপ্রাইজের নামে তালতলী অগ্রণী ব্যাংক থেকে ২০১২ সালে ৫ লাখ টাকা সিসি ঋণ (৫২/১২) গ্রহণ করেন। ওই সিসি ঋণের বিপরীতে মোঃ শহীদ তার বাবা রাজ্জাক তালুকদারের ৭৮ নং মৌজায় ৫২,৭৭,৮০,১৯৩,১৯৭ ও জমা খারিজ ২৪১ নং খতিয়ানের ১৪৭৮, ১৪৭৯,১৪৮৩,১৭৮৪,১৪৯০,১৪৯১,১৪৯২,১৪৯৪,১৪৯৫,১৪৯৬,১৪৯৭,১৪৯৮,১৫২০ ও ১৫২১ নং দাগে ২ একর ৭১ শতাংশ জমির মটর্গেজ দেয়। ঋণ নেয়ার পর থেকে ওই ঋণ পরিশোধ করেননি তিনি। বর্তমান সুদে আসলে ব্যাংকে ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৭৬ হাজার ৯৩২ টাকা। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গত ২৯ সেপ্টেম্বর অর্থ ঋণ আদালত আইনের ২০০৩ এর ১২(৩) ধারা মোতাবেক ব্যাংকে মর্টগেজ দেয়া সম্পত্তির নিলাম দরপত্র আহ্বান করেন। কিন্তু তাতেও ঋণগ্রহীতার টনক নড়েনি। নিলাম দরপত্র আহ্বানের পরে বের হয় আসে প্রতারণার আসল চিত্র।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঋণের বিপরীতে ব্যাংকে দেয়া তফসিল সম্পত্তির ২ একর ৭১ শতাংশের জমির মধ্যে রাজ্জাক তালুকদার ১৯৯৬ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত আবদুল খালেক মুসল্লি, মাজেদা বেগম, শাহজাহান আকন, রাহিমা বেগম ও মোঃ বেলাল হোসেনের কাছে ১ একর ৬৭ শতাংশ জমি ঋণ গ্রহণের আগেই বিক্রি করেছেন। কিন্তু ওই জমি ক্রয়কৃত মালিকরা তাদের নামে মিউটিশন করেনি। এই সুযোগে মোঃ শহীদ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ভুল বুঝিয়ে প্রতারণা করে ওই জমি মর্টগেজ দিয়ে ঋণ নিয়েছেন। গত ৭ বছরে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করে গাঢাকা দেন তিনি। যোগাযোগ করলেও তিনি তাদের পাত্তা দেননি এমন অভিযোগ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের। গত ২০ বছরে ওই জমিতে ১৫টি পরিবার বসতভিটা নির্মাণ করে করে বসবাস করে আসছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই সম্পত্তি নিলামের দরপত্র আহ্বানের পরে ভুক্তভোগী আশ্রাফ আলী তালুকদার, হারুন তালুকদার, মজিবর তালুকদার, রাসেল তালুকদার, ইউনুস তালুকদার, রেদওয়ান সরদার, নিজাম, বেলাল, শাহজাহান আকন, ইব্রাহিম জোমাদ্দার, খালেক মুসল্লি, বসির, নসু, জাকির ও শানু মিয়া বিপাকে পড়ে। ওই জমি নিলাম সম্পন্ন হলে জমিতে বসবাসরত অসহায় পরিবারগুলোকে পথে বসতে হবে এ অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। দ্রুত প্রতারণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে নিলাম বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
এ বিষয়ে শাহজাহান আকন বলেন, ১৯৯৯ সালে রাজ্জাক তালুকদার আমার কাছে ওই জমি থেকে ৬১ শতাংশ জমি বিক্রি করেন। কিন্তু আমি ওই জমির মিউটিশন করাইনি। এই সুযোগে তিনি ও তার ছেলে শহীদ আমার জমি নিজের নামে দেখিয়ে প্রতারণা করে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে। এখন আমার জমি নিলামে উঠেছে।
Leave a Reply