ফেনীর সোনাগাজী উপজে’লায় মাদ্রাসাছা’ত্রী নু’সরাত জাহান রাফি হ’ত্যায় অংশ নেওয়া তাঁর ঘনিষ্ঠ সহপাঠী কামরুন নাহার মণি সদ্য ভূমিষ্ঠ কন্যাসন্তান নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার আ’দালতের কা’ঠগড়ায় দাঁড়ান। বেলা সোয়া ১১টার দিকে ফেনীর নারী ও শি’শু নি’র্যাতন দ’মন ট্রা’ইব্যুনালের বি’চারক মামুনুর রশিদ মণিসহ সব আ’সামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
এর আগে সোনাগাজী ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৬ আ’সামিকে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে আ’দালত চত্বরে নিয়ে আসা হয়। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের আ’দালতের কা’ঠগড়ায় তোলা হয়। সিরাজ-উদ-দৌলা সবাইকে সালাম দিয়ে কাঠগড়ায় ওঠেন। সে সময় সবাইকে দোয়া পড়তে দেখা যায়। আ’সামিদের উ’দ্বিগ্ন দেখা যায়।
তাঁদের ভেতরেই একজন কামরুন নাহার মণি। তিনি তঁর সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া সন্তানকে কোলে নিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়ান। কাঠগড়ায় ওঠার আগে মণি তাঁর সন্তানকে কোলে করে নিয়ে যান আ’দালত প্রাঙ্গণে। সে সময় শি’শুটির শরীরে একটি তোয়ালে পেঁচানো অবস্থায় দেখা যায়।
গত ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে কা’রাব’ন্দি কামরুন নাহার মণির প্রসব বেদনা শুরু হলে দ্রুত তাঁকে ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে রাত সাড়ে ১২টায়, অর্থাৎ ২১ সেপ্টেম্বর মণির কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে। নুসরাত হ’ত্যা মা’মলায় মণি যখন গ্রে’প্তার হন, তখন তিনি পাঁচ মাসের অ’ন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
মা’মলার বি’চারকাজ শুরু হলে মণিকে প্রতি কার্যদিবসে আ’দালতে হাজির করা হয়। তাঁর আইনজীবী কয়েকবার জা’মিন চাইলেও আ’দালত নামঞ্জুর করেন। অ’ন্তঃসত্ত্বা থাকার কারণে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অ’ব্যাহতি দিয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে বি’চারকাজে অংশ নেওয়ার আবেদন জানালে আ’দালত সেটাও নামঞ্জুর করেন।
আ’দালতে মণির আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ সেপ্টেম্বর ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চি’কিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আবু তাহেরের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড ২৪ সেপ্টেম্বর সন্তান প্র’সবের সম্ভাব্য তারিখ দিয়ে তাঁকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দেন।
গর্ভে সন্তান রেখেই নুসরাত জাহান রাফি হ’ত্যায় অংশ নেন কামরুন নাহার মণি। তিনিই প্রথম নুসরাতের শরীরে কে’রোসিন ঢে’লে আ’গুন ধ’রিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, হ’ত্যায় অংশ নেওয়া তাঁর তিন সহযোগী পুরুষের জন্য তিনটি বোরকা ও হাতমোজা সংগ্রহ করেছিলেন ঘটনার আগে।
নুসরাত জাহান রাফি হ’ত্যার দা’য় স্বী’কার করে মা’মলার প্রধান আ’সামি শামীমের জ’বানব’ন্দিতে মণির কথা উঠে আসে। পরে কামরুন নাহার মণি আ’দালতে স্বী’কারোক্তিমূলক জবানব’ন্দি দেন। সেখানে তিনি তাঁর দোষ স্বীকার করে নিয়ে এসব কথা বলেছিলেন।
নুসরাত হ’ত্যা মা’মলার ত’দন্তকারী কর্মকর্তা মো. শাহ আলম গণমাধ্যমে এসব কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘কামরুন নাহার মণি গর্ভে সন্তান নিয়ে অপ’র তিন পুরুষ সহযোগীর সঙ্গে সরাসরি কি’লিং মি’শনে অংশ নেন। সহযোগীদের জন্য বোরকা ও হাতমোজা কেনেন তিনি।’
শাহ আলম বলেছিলেন, ‘নু’সরাতের ঘনিষ্ঠ সহপাঠী ছিলেন মণি। অথচ হ’ত্যার সময় নু’সরাতের বুকসহ শরীর চে’পে ধ’রেন তিনি। মা’মলার আরেক আ’সামি উম্মে সুলতানা পপি নুসরাতের পা বেঁ’ধে চলে যাওয়ার সময় মণি তাকে শম্পা বলে ডাকেন। এই শম্পা নামটি মনির দেওয়া।’
কামরুন নাহার মণি সোনাগাজী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ঈমান আলী হাজি বাড়ির প্রয়াত বি’জিবি সদস্য আজিজুল হকের পালিত মেয়ে। নুসরাতের সঙ্গে তিনিও আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। গত ৯ এপ্রিল তাঁকে বাড়ি থেকে গ্রে’প্তার করা হয়। তিনি মা’মলার ১৬ নম্বর আ’সামি।
Leave a Reply